প্রচ্ছদ > জাতীয় >

ক্ষুধা নিবারণের সক্ষমতায় ৩ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ

article-img

বিশ্বের ক্ষুধা সূচক-২০২৪ অনুযায়ী এ বছর ক্ষুধা নিবারণের সক্ষমতায় বাংলাদেশ ৩ ধাপ পিছিয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে ১২৭ দেশের মধ্যে ৮৪তম অবস্থানে রয়েছে। সূচক মতে, বাংলাদেশ এখন মাঝারি মাত্রার ক্ষুধা মোকাবেলা করছে। এককথায় দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে।

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিশ্বখাদ্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা।

 

এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ এ মুহূর্তে এক কঠিন সময় পার করছে। প্রায় আড়াই মাস আগে একটি সরকারের পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও জনজীবনে স্বস্তি আসেনি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জনজীবনে নাভিশ্বাস এনেছে।

বেশির ভাগ মানুষ প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করতে পারছে না। খাদ্য ক্রয়ের সক্ষমতা না থাকার কারণে মানুষ অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়ে স্বাস্থ্যহানি ঘটাচ্ছে। অভিমূল্যে খাদ্য কিনতে গিয়ে চিকিৎসা খরচ মেটাতে পারছে না। অথচ খাদ্য ও চিকিৎসা দুটোই জনগণের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার।

 

বক্তারা আরো বলেন, প্রায় ২২ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে তাদের মধ্যে পুষ্টিহীনতা মারাত্মক পর্যায়ের। তাদের জন্য যে সামাজিক সুরক্ষাজাল রয়েছে তা এ অবস্থা হতে উত্তরণে মোটেই যথেষ্ট নয়। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য টেকসই কৃষিব্যবস্থা তথ্য পরিবেশবান্ধব চাষাবাদ প্রবর্তন ও জমি এবং পানির ওপর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

 

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলম বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান যে লক্ষ্য নিয়ে প্রতিবছর বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে লক্ষ্য আজও পূরণ হয়নি।

বিশ্বব্যাপী খাদ্যনিরাপত্তা গড়ে তোলার ছলে খাদ্যহীনতা ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। আজও সারা বিশ্বে ৭৫ কোটি মতান্তরে ১০০ কোটি মানুষ প্রতিদিন ক্ষুধার্ত থাকে। বিশ্বের ৪৫০ কোটি মানুষ পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পায় না। এ মানুষের ৫০ শতাংশ অবস্থান করছে এশিয়া মহাদেশে।'

 

তিনি আরো বলেন, ‘জাতিসংঘ তরফে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য নিবারণ কল্পে ২০০০ সালে ১৫ বছর মেয়াদি সহাস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় ২০১৫ আবার ১৫ বছর মেয়াদি, অর্থাৎ ২০৩০ সাল পর্যন্ত স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়। আজ ২০২৪ সালের শেষ পর্যায়। বাকি ৫ বছরে লক্ষ্য পূরণ হওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই। এসব কিছু নির্দেশ করে বিশ্বের নীতিনির্ধারকরা সমাধানের সঠিক রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না অথবা সচেতনভাবে বিশ্বের জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে। অথবা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের প্রশ্ন নিয়ে জনগণের সাথে নিছক তামাশা করছে।’

 

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি প্রবীণ শ্রমিক নেতা আবুল হোসাইন, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, সহসভাপতি রেহেনা বেগম, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভানেত্রী লাভলী ইয়াসমিন ও বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম আরা প্রমুখ।


আরো খবর